রবিবার, ১৪ জুলাই, ২০১৯

শ্রীমদ্ভাগবত গীতা দশম অধ্যায়

দশম অধ্যায়

বিভূতী যোগ 
ভগবান উবাচ
ভূয় এব মহাবাহো শৃনু মে পরমম্‌ বচঃ ।
যত্ তে অহম্‌ প্রীয়মানয় বক্ষামি হিতকাময়া ।।১
অর্থ-ভগবান বললেন হে মহাবাহো তুমি আমার প্রিয় পাত্র তাই তেমার হিতকামনায় আমি যা পুর্বে বলেছি তার থেকেও উত্কৃষ্ট তত্ত্ব বলছি তুমি তা মনোযোগ সহকারে শ্রবন কর।

ন মে বিদুঃ সুরগণাঃ প্রভবম্‌ ন মহার্ষয় ।
অহম্‌ আদিঃ হি দেবানাম্‌ মহষীনাম্‌ চ সর্বশঃ ।।২
অর্থ-মহর্ষিরা বা দেবতারাও আমার উত্পত্তি অবগত হতে পারে না কারন আমি দেবতা ও মহর্ষিদের আদি কারন।

যঃ মাম্‌ অজম্‌ অনাদিম্‌ চ বেত্তি লোক মহেশ্বরম্‌ ।
অসংমূঢ় সঃ মর্ত্তেষু সর্বপাপৈঃ প্রমুচ্যতে ।।৩
অর্থ-যিনি আমাকে আদিহীন জন্মরহিত ও সর্বলোকের মহেশ্বর বলে জানেন, মানুষের মধ্যে তিনিই মোহশুন্য হয় এবং সমস্ত পাপথেকে মুক্ত হন।

বুদ্ধিঃ জ্ঞানম্‌ অসংমোহ ক্ষমা সত্যম্‌ দমঃ শমঃ ।
সুখম্‌ দুঃখম্‌ ভবঃ অভাবঃ ভয়ম্‌ চ অভয়ম্‌ এব চ ।।৪

অহিংসা সমতা তুষ্টিঃ তপঃ দানম্‌ যশঃ অযশঃ ।
ভবন্তি ভাবাঃ ভূতানাম্‌ মত্তঃ এব পৃথগবিধাঃ ।।৫
অর্থ-বুদ্ধি, জ্ঞান, মোহমুক্তি, ক্ষমা, সত্য, বাহ্যেইন্দ্রিয় ও অন্তরিন্দ্রিয়ের সংযম, সুখ,দুঃখ, জন্ম,মৃত্যু, ভয়, অভয়, অহিংসা, সমচিত্ততা, সন্তোষ, তপস্যা, দান, ধর্ম নিমিত্ত কীর্ত্তি ও অধর্ম নিমিত্ত অকির্ত্তি এই সবই আমার থেকে উত্পন্ন হয়।

মহর্ষয়ঃ সপ্ত পুর্বে চত্বার মনবঃ তথা ।
মদভাবাঃ মানসঃ জাত্‌ঃ যেসাম্‌ লোক ইমাঃ প্রজাঃ ।।৬
অর্থ-সপ্ত মহর্ষি তাদের পুর্বজাত সনকাদি চার কুমার এবং চতুর্দশ মনু, সকলেই আমার মন থেকে উত্পন্ন হয়েছে, এবং এই জগতের স্থাবর জঙ্গম আদি সমস্ত প্রজা তারাই সৃষ্টি করেছেন।
এতাম্‌ বিভূতিম্‌ যোগম্‌ চ মম্‌ যঃ বেত্তি তত্ত্বতঃ ।
সঃ অবিকল্পেন যোগেন যুজ্যতে ন অত্র সংসয় ।।৭
অর্থ-যিনি আমার এই বিভূতি এবং যোগ যথার্থরুপে জানেন তিনি অবিচলিত ভাবে আমার সেবায় যুক্ত হন, সে বিষয় কোন সন্দেহ নাই।

অহম্‌ সর্বস্য প্রভবঃ মত্তঃ সর্বম্‌ প্রবর্ততে ।
ইতি মত্বা ভজন্তে মাম্‌ বুধাঃ ভাবসমন্বিতা ।।৮
অর্থ-আমি জড় এবং চেতন জগতের সবকিছুর উত্স। সবকিছু আমার থেকে প্রবর্তিত হয়। সেই তত্ত্ব অবগত হয়ে যারা শুদ্ধ ভক্তি সহকারে আমার ভজনা করেন তারাই যথার্থ তত্ত জ্ঞানী।

মত্-চিত্তাঃ মত্-গতপ্রানাঃ বোধয়ন্ত পরস্পরম্‌ ।
কথয়ন্ত চ মাম্‌ নিত্যম্‌ তুষ্যন্তি চ রমন্তি চ ।।৯
অর্থ-যারা আমাকে চিত্ত ও প্রান সম্পুর্নরুপে সমর্পন করেছেন,তারা পরস্পরের মধ্যে আমার কথা আলাচনা করে এবংআমার সম্বন্ধে পরস্পকে বুঝিয়ে পরম সন্তোষ ও অপ্রাকৃত আনন্দ লাভ করেন।

তেষাম সততযুক্তানাম্‌ ভজতাম্‌ প্রীতিপুর্বকম্‌ ।
দদামি বুদ্ধিযোগম্‌ তম্‌ যেন মাম্‌ উপযান্তি তে ।।১০
অর্থ-যারা নিত্ত ভক্তি যোগ দ্বারা প্রীতিপুর্বক আমার ভজনা করেন, আমি তাদের শুদ্ধ জ্ঞান জনিত বুদ্ধি দান করি, যার দ্বারা তারা আমার কাছে ফিরে আসতে পারে।

তেষাম্‌ এব অনুকম্পার্থম্‌ অহম্‌ অজ্ঞানজম্‌ তমঃ ।
নাশয়ামি আত্ম ভাবস্ত জ্ঞান দীপেন ভাস্ববা ।।১১
অর্থ-তাদের প্রতি অনুগ্রহ করে আমি তাদের হৃদয়ে অবস্থি হয়ে উজ্জল জ্ঞান প্রদীপ দ্বারা অজ্ঞান জনিত মোহান্ধকার নাশ করি।

অর্জন উবাচ
পরম্‌ ব্রহ্ম পরম্‌ ধাম্‌ পবিত্রম্‌ পরমম্‌ ভবান ।
পুরুষম্‌ শাশ্বতম্‌ দিব্যম্‌ আদি দেবম্‌ অজম বিভূম ।।১২

আহু ত্বাম্‌ ঋষয় সর্বে দেবর্ষিঃ নারদ তথা ।
আসিতঃ দেবলঃ ব্যাসঃ স্বয়ম্‌ চ এব ব্রবীষি মে ।।১৩
অর্থ-অর্জুন বললেন তুমি পরম ব্রহ্ম পরমধাম পরম পবিত্র পরম পুরুষ নিত্য আদি দেব,অজ ও বিভূ। দেবর্ষি নারদ,অসিত,দেবল, ব্যাস প্রভৃতি ঋৃষিরা তোমাকে সেই
ভাবে বর্ননা করেছেন এবং তুমি নিজেও তা এখন আমাকে বলছ।



সর্বম্‌ এতত্ ঋৃতম্‌ মন্যে যত্ মাম্‌ বদসী কেশব ।
ন হি তে ভগবন ব্যক্তিম্‌ বিদুঃ দেবাঃ ন দানবাঃ ।।১৪
অর্থ-হে কেশব,তুমি আমাকে যা বলছ তা আমি সত্য বলে মনে করি? হেভগবান দেবতা এবং দানবেরা কেউই তোমার তত্ত ভাল ভাবে জানে না।

সয়ম্‌ এব আত্মনা আত্মনম্‌ বেত্থ ত্বম্‌ পুরুষত্তম্‌ ।
ভূতভাবন্‌ ভূতেশ দেবদেব জগত্পতে ।।১৫
অর্থ-হে ভূতভাবন হে ভূতেশ হে দেব হে জগত্পতে হে পুরুষোত্তম তুমি নিজেই তোমার চিত্শক্তির দ্বারা তোমার ব্যক্তিত্ত অবগত আছ।

বক্তুম অর্হসি অশেষেন দিব্যাঃ হি আত্মা বিভূতয়া ।
যাভিঃ বিভূতিভিঃ লোকান ইমান ত্বম্‌ ব্যাপ্য তিষ্ঠসি ।।১৬
অর্থ-তুমি যে বিভূতির দ্বারা এই লোক সমুহ পরিব্যাপ্ত হয়ে আছ, সেই সমস্ত দিব্য
আত্ম বিভূতি সম্যক রুপে বর্ননা করতে কেবল তুমিই সমর্থ।

কথম্‌ বিদ্যামহম্‌ যোগিন ত্বাম্‌ সদা পরিচিন-য়ন ।
কেষু কেষূ চ ভাবেষু চিন্ত্যোহসি ভগবন ময়া ।।১৭
অর্থ-হে যোগেশ্বর কিভাবে সর্বদা তোমার চিনা করলে আমি তোমাকে জানতে পারব? হে ভগবান, কোন কোন বিবিধ আকৃতির মাধ্যমে আমি তোমাকে ধ্যান করব।

বিস্তারেন আত্মনঃ যোগম্‌ বিভূতি চ জনার্দন ।
ভূয় কথয় তৃপ্তিঃ হি শৃন্নতঃ নাস্তি মে অমৃতম্‌ ।।১৮
অর্থ-হে জনার্দন তোমার যোগ তোমার বিভূতি বিস্তৃত ভাবে আমাকে আবার বল কারন তেমার উপদেশামৃত পান করেও আমার পরিতৃপ্তি হচ্ছে না; আমি আর শুনতে ইচছা করি।
ভগবান উবাচ
হন্ত তে কথয়িষ্যামি দিব্যাঃ হি আত্মবিভূতয়া ।
প্রধান্যতঃ কুরুশ্রেষ্ঠ নাস্তি অন্ত বিস্তরস্য মে ।।১৯
অর্থ-ভগবান বললেন-হে অর্জুন আমার দিব্য বিভূতির অন্ত নেই,কয়েকটি প্রধান প্রধান বিভূতির কথাবলি তুমি শ্রবন কর।

অহম্‌ আত্মা গুড়াকেশ সর্বভূত আশয়স্থিতঃ ।
অহম আদি চ মধ্যম্‌ চ ভূতানাম্‌ অন্তঃ এব চ ।।২০
অর্থ-হে-গুড়াকেশ আমিই সমস্ত জীবের হৃদয় অবস্থিত পরমাত্মা, আমি সর্ব ভূতের আদি মধ্য ও অনত।

আদিত্যানাম অহম্‌ বিষ্ণুঃ জ্যোতিষাম্‌ রবি অংশুমান ।
মরিচিঃ মরুতাম্‌ অস্মি নক্ষত্রনাম্‌ অহম্‌ শশী ।।২১
অর্থ-আমি আদিত্যদের মধ্যে বিষ্ণু, জ্যোতিস্কদের মধ্যে কিরনশালী সুর্য, মরুতদেও মধ্যে মরীচি এবং নক্ষত্রদের মধ্যে চন্দ্র।

বেদানাম্‌ সামবেদঃ অস্মি দেবানাম অস্মি বাসবঃ ।
ইন্দ্রিনাম্‌ মন চ অস্মি ভূতানাম অস্মি চেতনা ।২২
অর্থ-সমস্ত বেদের মধ্যে আমি সামবেদ, সমস্ত দেবতাদের মধ্যে আমি ইন্দ্র, সমস্ত ইন্দ্রিয়ের মধো আমি মন,সমস্ত জীব সত্তার মধ্যে আমি চেতনা।

রুদ্রানাম শঙ্কর চ অস্মি বিত্তেশঃ যক্ষরক্ষসাম্‌ ।
বসুনাম পাবকঃ চ অস্মি মেরু শিখরিনাম অহম্‌ ।।২৩
অর্থ-রুদ্রের মধ্যে আমি শিব, যক্ষ এবং রাক্ষসদের মধ্যে আমি কুবের,বসুদের মধ্যে আমি অগ্নি এবং সমস্ত পর্বতের মধ্যে আমি সুমের।


পুরোধসাম্‌ চ মুখ্যম্‌ মাম্‌ বিদ্ধি পার্থ বৃহস্পতিম্‌ ।
সেনানীনাম্‌ অহম্‌ স্কন্দঃ সরসাম অস্মি সাগরঃ ।।২৪
অর্থ-হে অর্জুন পুরহিতদের মধ্যে মহাভক্ত বৃহস্পতি সেনাদের মধ্যে আমি কার্তিক জলাশয়ের মধ্যে আমি সাগর।

মহর্ষীনাম্‌ ভৃগুঃ অহম্‌ গিরাম্‌ অস্মি একম্‌ অক্ষরম ।
যজ্ঞানাম্‌ জপযজ্ঞঃ অস্মি স্থাবরানাম হিমালয়ঃ ।।২৫
অর্থ-সমস্ত মহর্ষদের মধ্যে আমি ভৃগু সমস্ত বাক্যের মধ্যে আমি প্রণব সমসত যজ্ঞের মধ্যে আমি জপযজ্ঞ এবং সমস্ত স্থাবর বস্তুর মধ্যে আমি হিমালয়।

অশ্বথঃ সর্ববৃক্ষানাম দেবর্ষীনাম্‌ চ নারদ ।
গন্ধানাম্‌ চিত্ররথঃ সিদ্ধানাম্‌ কপিল মুনি ।।২৬
অর্থ-সমস্ত বৃক্ষের মধ্যে আমি অশ্বথ, দেবর্ষীদের মধ্যে আমি নারদ, গন্ধর্বদের মধ্যে আমি চিত্ররথ সিদ্ধদের মধ্যে আমি কপিল মুনি।

উচ্চৈঃশ্রবসম অশ্বানাম বিদ্ধি মাম্‌ অমৃতোদ্ভবম্‌ ।
ঐরাবতম্‌ গজেন্দ্রানাম নরানাম চ নরাধিপম্‌ ।।২৭
অর্থ-অশ্বদের মধ্যে আমি উচ্চৈশ্রবারুপে সমুদ্র মন্থনের সময় উদ্ভুদ হই, হস্তীদের মধ্যে আমি ঐরাবত এবং মনুষ্যদের মধ্যে সম্রাট।

আয়ুধা নাম অহম্‌ বজ্রম্‌ ধেনুনাম্‌ অস্মি কামাধুক ।
প্রজনঃ অস্মি কন্দর্পঃ সর্পানাম্‌ অস্মি বাসুকী ।।২৮
অনন্ত চ অস্মি নাগানাম বরুণঃ যাদসাম্‌ অহম্‌ ।
পিত্রিনাম্‌ অর্যমা চ অস্মি যমঃ সংযমতাম্‌ অহম্‌ ।।২৯
অর্থ-সমস্ত অস্ত্রের মধ্যে আমি বজ্র সমস্ত গাভীদের মধ্যে আমি কামধেনু আমি প্রাণীদের প্রজনন শক্তি কাম্‌ এবং সর্পদের মধ্যে বাসকী। সমস্ত নাগদের মধ্যে আমি অনন্ত। জলচরদের মধ্যে আমি বরুন পিতৃদের মধ্যে পিতৃলোকের অধিরুপে অর্য্যমা এবং দন্ডদাতাদের মধ্যে আমি যম্‌।

প্রহ্লাদ চ অস্মি দৈত্যানাম্‌ কালঃ কলয়তাম্‌ অহম্‌ ।
মৃগানাম্‌ চ মৃগেন্দ্রঃ অহম্‌ বৈনতেয়ঃ চ পক্ষিনাম্‌ ।৩০
অর্থ-দৈত্যদের মধ্যে আমি পহ্লাদ বশীকারিদের মধ্যে আমি কাল পশুদের মধ্যে আমি সিংহ এবং পাখিদের মধ্যে আমি বিনতা তনয় গরুড়।

পবনঃ পবতাম্‌ অস্মি রাম শস্ত্রভূতাম্‌ অহম্‌ ।
ঋষানাম্‌ মকরঃ চ অস্মি স্রোতসাম্‌ অস্মি জাহ্নবী ।।৩১
অর্থ-পবিত্রকারি বস্তুর মধ্যে আমি বায়ু, অস্ত্রধারিদের মধ্যে আমি পরশুরাম, মত্স্যদের মধ্যে মকর, এবং নদীদের মধ্যে আমি গঙ্গাঁ।

সর্গানাম আদিঃ অনন্ত চ মধ্যম্‌ চ এব অহম্‌ অর্জুন ।
আধ্যাত্মবিদ্যা বিদ্যানাম্‌ বাদঃ প্রবদতাম্‌ অহম্‌ ।।৩২
অর্থ-হে অর্জুন সমস্ত সৃষ্টির মধ্যে আমি আদি,অনত এবং মধ্য; সমস্ত বিদ্যার মধ্যে আমি আধ্যাত্মবিদ্যা এবং তার্কিকদের বাদ, জল্প ও বিতন্ডার মধ্যে আমি সিন্ধান্তসসবাদ।

অক্ষরানাম্‌ অকারঃ অস্মি দন্ধঃ সামসিকস্য চ।
অহম্‌ এব অক্ষয় কালঃ ধাতা অহম্‌ বিশ্বতোমূখ ।।৩২
অর্থ-সমস্ত অক্ষরদের মধ্যে আমি অকার, সমাস সমুহের মধ্যে দন্দ্ব, সংহার কারিদের মধ্যে মহাকাল রুদ্র এবং স্রষ্টার মধ্যে আমি ব্রহ্মা।

মৃত্যু সর্বহরঃ চ অহম্‌ উদ্ভবঃ চ ভবিষ্যতাম্‌ ।
কীর্তি শ্রীঃ বাক্‌ চ নারীনাম্‌ স্মৃতিঃ মেধা ধৃতিঃ ক্ষমা ।।৩৪
অর্থ-সমস্ত হরন কারিদের মধ্যে আমি সর্বগ্রাসি মৃত্যু,ভাবিকালের বস্তুদের মধ্যে আমি উদ্ভাবনী নীতি,নারীদের মধ্যে কীর্তি, শ্রী,বানী, স্মৃতি,মেধা,ধৃতি এবং ক্ষমা । বৃহত্ সাম তথা সম্মাম গায়ত্রী ছন্দসাম্‌ অহম্‌ ।
মাসানাম্‌ মার্গশীর্ষঃ অহম্‌ ঋৃতুনাম কুসুমকার ।।৩৫
অর্থ-আমি সাম বেদের মধ্যে বৃহত্ সাম, সমস্ত ছন্দের মধ্যে গায়ত্রী, মাস সমুহের মধ্যে অগ্রহায়ন এবং ঋৃতুদের মধ্যে পুস্প সমরোহময় বসন্ত।

দ্যুতম্‌ ছলয়তাম অস্মি তেজঃ তেজস্বিনা অহম্‌ ।
জয়ঃ অস্মি ব্যবসায়ঃ অস্মি সত্ত্বম্‌ সত্ত্ববতাম্‌ অহম্‌ ।।৩৬
অর্থ-সমস্ত বঞ্চনা কারিদের মধ্যে দ্যুতক্রীড়া, তেজস্বীদের মধ্যে তেজ। অমি বিজয়, আমি উদ্যম এবং আমি বলবানদের মধ্যে বল।

বৃঞ্চিনাম্‌ বাসুদেব অস্মি পান্ডবানাম্‌ ধনঞ্জয় ।
মুনীনাম অপি অহম্‌ ব্যাসঃ কবিনাম উশনাঃ কবিঃ ।।৩৭
অর্থ-বৃঞ্চিদের মধ্যে অমি বাসুদেব পান্ডবদের মধ্যে ধনঞ্জয়,আমি মুনিদের মধ্যে ব্যাস এবং কবিদের মধ্যে শুক্রাচার্য্য।

দন্ডঃ দময়তাম্‌ অস্মি নীতিঃ অস্মি জিগীষতাম ।
মৌনম্‌ চ এব অস্মি গুহ্যানাম্‌ জ্ঞানম্‌ জ্ঞানবতাম্‌ অহম্‌ ।।৩৮
অর্থ-আমি দমন করিদের মধ্যে দন্ড জয়াভিলাষীদের মধ্যে নীতি গুহ্যধর্মের মধ্যে মৌন এবং জ্ঞানবানদের মধ্যে জ্ঞান।

যত্ চ অপি সর্বভূতানাম্‌ বীজম্‌ তত্ অহম্‌ অর্জুন ।
ন তত্ অস্তি বিনা যত্ স্যাত্ ময়া ভূতম্‌ চরাচরম্‌ ।।৩৯
অর্থ-হে অর্জুন যা সবর্ ভূতের্‌ বীজ স্বরুপ তাও আমি, যেহেতু আমাকে ছাড়া স্থাবর জঙ্গম্‌ কোন বস্তুরই অস্তিত্ত্ব থাকতে পারেনা।

ন অন্তঃ অস্তি মম্‌ দিব্যানাম্‌ ,বিভূতি নাম্‌ পরন্তপ ।
এষঃ তু উদ্দেশতঃ প্রোক্তঃ বিভূতেঃ বিস্তর ময়া ।।৪০
অর্থ-হে পরন্তপ আমার দিব্য বিভুতির অন্ত নেই আমি কেবল সংক্ষেপে এই সমস্ত বিভূতির কথা বর্ননা করলাম।
যত্ যত্ বিভূতীম্‌ সত্তম্‌ শ্রীমত্ উর্জিতম্‌ এব বা ।
তত্ তত্ এব অবগচ্ছ ত্বম মম তেজ অংশ সম্ভবম্‌ ।।৪১
অর্থ-ঐষর্য্য যুক্ত শ্রী-সম্পন্ন বল প্রভাবাদির আধিক্যযুক্ত যত বস্তু আছে সবই আমার শক্তির অংশ সম্ভুত বলে জানবে।

অথবা বহুনা এতেন কিম্‌ জ্ঞাতেন তব অর্জুন ।
বিষ্টভ্য অহম্‌ ইদম্‌ কৃত্স্নম্‌ এক অংশেন স্থিতম্‌ জগত্ ।।৪২
অর্থ-হে অর্জুন অধিক কি আর বলব এইটুকু মাত্র জেনে রাখ আমি আমার এক অংশের দ্বারা সমস্ত জগত্ ব্যাপ্ত হয়ে রয়েছি।

শেয়ার করুন

0 মন্তব্য(গুলি):